জহিরুল ইসলাম, চকরিয়া :
চকরিয়া উপজেলা পূর্ব বড়ভেওলায় মাতামুহুরী নদীর ভাঙন রোধে কাজ চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। কাজটি শুরু হওয়ার ৫ মাসের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২০ভাগ কাজও সম্পন্ন হয়নি। এতে এই অর্থ বছরে কাজটি কোন মতেই শেষ হচ্ছে না। চলতি বর্ষা মৌসুমে শতশত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি নদীতে তলিয়ে যাওয়াসহ এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়ার আশংকা রয়েছে। ইতোমধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সড়ক নদীতে তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টরা যেন-তেনভাবে কাজ সম্পœন দেখিয়ে বরাদ্দের ২ কোটি টাকা আত্মসাতের পায়তারা করছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়নের ব্যাপক এলাকা মাতামুহুরী নদীর তীব্র ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। ওই ইউনিয়নে গত এক বছরে কয়েকশত ঘরবাড়ি নদীতে তলিয়ে গেছে। গত বছর ওই ভাঙন এলাকা দিয়ে মাতামুহুরী নদীর ঢলের পানি ঢুকে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের আনিচ পাড়া এলাকায় এই ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ইতোমধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জকরিয়া সড়কটির যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে গেছে। এলাকাবাসির দাবীর প্রেক্ষিতে এ বছর ওই ভাঙ্গন এলাকায় মাতামুহুরী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে জিও ব্যাগ দিয়ে নদীর তলদেশে ডাম্পিং ও ঢালু অংশে বালি ও সিমেন্ট মিশ্রিম বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর জন্য প্রায় ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। গত জানুয়ারী মাসে এ কাজটি টেন্ডার আহবান করা হলে মেসার্স নিয়াজ ট্রেডার্স কাজটি দায়ীত্ব পান। বিগত ৫ মাস আগে কাজ শুরু হলেও এখনও ২০ভাগ কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। এতে এলাকাবাসি ব্যাপক নদী ভাঙন ও ভয়াবহ বন্যার আশংকা করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানায়; ৫শত মিটারের এ কাজটি সম্পাদনের জন্য গত জানুয়ারী মাসে টেন্ডার আহবান করা হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটির দায়ীত্ব পেয়েছেন মেসার্স নিয়াজ ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। অভিযোগ উঠেছে এ কাজটির ওয়ার্ক অর্ডার হওয়ার ৫ মাস পরও ওই ভাঙন এলাকায় উল্লেখযোগ্য কোন কাজ হয়নি। যে কাজগুলো করা হয়েছে তাতে ব্যপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। যেন-তেনভারে কাজ করা হচ্ছে। এলাকাবাসি জানায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের লোকজন প্রায় এসময় এখানে আসেন এবং ঘুরে চলে যাচ্ছেন। চোখে পড়ার মতো তেমন কোন কাজ এ পর্যন্ত করা হয়নি। সামনে একটু বৃষ্টি শুরু হলেই মাতামহুরী নদীতে পাহাড়ী ঢল নামবে। ঢলের তোড়ে এলাকার শতশত ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এই ভাঙনটির কারণে গত বর্ষ মৌসুমে চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা, শাহারবিল, বিএমচর, কোনাখালী, পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া ও বদরখালী ইউনিয়নে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। এ বছরও তাই হতে যাচ্ছে। এলাকাবাসি জানায়; ঠিকাদারী প্রতিষ্টান কোন কাজ না করে বৃষ্টির দিকে চেয়ে রয়েছেন। বৃষ্টি হলেই সব ভেঙ্গে যাবে। আর তাতেই তারা বলবে সব কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর নদী ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। ভেঙ্গে গেলেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্টান কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে বিল উঠিয়ে নেবে।
এলাকাবাসি জানায়, এখন যেসব বস্তাগুলোতে বালি ভরা হচ্ছে তার সবই বালি। কিন্তু প্রতি বস্তায় ৮ভাগ বালি ও এক ভাগ সিমেন্ট দেয়ার কথা রয়েছে। এখানে বিন্দু পরিমানও সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে না। নদীর তলদেশে পানির নিচে জিও ব্যাগ দেয়া হচ্ছে না। উপরের অংশে একটি করে বালির বস্তা দেয়া হচ্ছে। এলাকাবাসির মতে এই বালির বস্তাগুলো নদীর ভাঙন ঠেকাতে পারবে না। সংশ্লিষ্টরা প্রায় সময় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে এখানে আসেন; ঘুরে চলে যাচ্ছেন। তারা কাজের কাজ কিছুই করছেন না। ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কারণে এলাকাবাসি প্রতিবাদ করতেও সাহস করছেন না। যে কাজগুলো করা হয়েছে, সেগুলোও নদীতে ঢলের পানি আসলেই নিশ্চিত তলিয়ে যাবে। আমাদের গ্রামের বেশীরভাগ ঘরবাড়ি আবারও নদীর ভাঙনের কবলে পড়বে। তাদের মতে কাজগুলো এলাকার কোন কাজে না আসলেও বরাদ্দের সিংহভাগ টাকা ঠিকই সংশ্লিষ্টদের পকেটে চলে যাবে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়; প্রায় ৫শত মিটারের ওই ভাঙনটিতে জিও ব্যাগ দিয়ে নদীর ভাঙন রোধের জন্য ১ কোটি ৯২লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারী মাসে এ কাজটির ওয়ার্ক অর্ডার দেয়া হয়েছে। জুন মাসের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টেন্ডার হওয়ার ৫ মাস পরও এখনও ২০ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়নি। এ ব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা(এসও) মোহাম্মদ আলী বলেছেন; ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর কারণে কাজটি শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে। এখন যা অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে কাজটি এ বছর শেষ নাও হতে পারে। বৃষ্টি শুরু হলেই কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। এ অবস্থায় এ কাজটির মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। এ কাজটির ঠিকাদার মোক্তার আহমদ বলেছেন আমার এক শেয়ারদার জিও ব্যাগ আনতে দেরী করায় কাজ শুরু করতে দেরী হয়ে গেছে। তারপরও আমি আশা করছি এ বছর ৫০ভাগ কাজ শেষ করতে পারবো। তিনি এই কাজে কোন অনিয়ম হচ্ছে না বলে দাবী করেছেন।
প্রকাশ:
২০১৬-০৬-৩০ ০৭:২৬:৩৯
আপডেট:২০১৬-০৬-৩০ ০৭:২৬:৩৯
- ২১ বছর পর মায়ের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ অনাথ শিশুকে বুঝিয়ে দিলেন ইঞ্জিনিয়ার সহিদুজ্জামান!
- রামুতে রেললাইনে অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ
- চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড এর নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিম
- নাইক্ষ্যংছড়িতে মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা
- চকরিয়ায় আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে সাত প্রার্থীকে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা
- আ.লীগের সিনিয়র নেতারা মাঠে নামায় পাল্টে যাচ্ছে ভোটের হিসাব
- সরকারী অফিস ফাঁকি দিয়ে ব্যাক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দরবেশকাটার বিসিক কর্মকর্তা
- “মাতারবাড়ী সংযোগ সড়কে রানিং বিল নিয়ে ঠিকাদার লাপাত্তা:
- রাতের আঁধারে প্রজেক্টে মুখোশধারিদের বিষ প্রয়োগ, মরে ভেসে উঠল ৩০ লাখ টাকার মাছ
- মেয়াদের এক বছর আগেই গোপনে পহরচাঁদা ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে সাঈদী
- মেয়াদের এক বছর আগেই গোপনে পহরচাঁদা ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন
- “মাতারবাড়ী সংযোগ সড়কে রানিং বিল নিয়ে ঠিকাদার লাপাত্তা:
- সরকারী অফিস ফাঁকি দিয়ে ব্যাক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দরবেশকাটার বিসিক কর্মকর্তা
- রাতের আঁধারে প্রজেক্টে মুখোশধারিদের বিষ প্রয়োগ, মরে ভেসে উঠল ৩০ লাখ টাকার মাছ
- আ.লীগের সিনিয়র নেতারা মাঠে নামায় পাল্টে যাচ্ছে ভোটের হিসাব
- চকরিয়ায় আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে সাত প্রার্থীকে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা
- নাইক্ষ্যংছড়িতে মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা
- চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড এর নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিম
- ২১ বছর পর মায়ের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ অনাথ শিশুকে বুঝিয়ে দিলেন ইঞ্জিনিয়ার সহিদুজ্জামান!
- রামুতে রেললাইনে অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ
পাঠকের মতামত: